-->
zWZ3ZJ90R4zzhbql6NUZDSuEAK5vmsQ96TEJw5QR
Bookmark

বিয়ে ও ডিভোর্স PDF ড. গওহার মুশতাক Biye O divorce

 

বিয়ে ও ডিভোর্স

লেখক : ড. গওহার মুশতাক
প্রকাশনী : কালান্তর প্রকাশনী
বিষয় : পরিবার ও সামাজিক জীবন, বিয়ে
পৃষ্ঠা : 128, কভার : হার্ড কভার, সংস্করণ : 1st published 2020

♦ভূমিকাঃ

‘‘মানুষ সামাজিক জীব। সমাজে বাস করার তাগিদেই মানুষকে কতগুলো বিধিবিধান পালন করতে হয়, কিছু নিয়মকানুন রক্ষা করতে হয়। শুধু সমাজ বা গোত্রই নয়, রাষ্ট্র থেকে শুরু করে বিশ্ব চরাচরেও মানুষকে টিকে থাকার জন্য, জীবনধারণের লক্ষ্যে কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে হয়। এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্ম পর্যন্ত টিকে থাকার জন্য বংশবিস্তার করতে হয়। আর বংশবিস্তারের জন্য সবচে’ উপযোগি মাধ্যম হচ্ছে বিয়ে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আজকাল দেশে বিয়েকে অনেক কঠিন করা হয়েছে। দেশে আইন করা হয়েছে মেয়েরা ১৮ এবং ছেলেরা ২১ এর আগে বিয়ে করতে পারবে না। তারপরও অনেক মা-বাবা ছেলেমেয়েদেরকে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার দিবা স্বপ্নের মোহে ফেলে দিয়ে তাদের বয়স ৩০ এর কোটা পার করে ফেলে। অথচ তারা ১২-১৪ বছর বয়স থেকেই বালেগে পরিণত হয়। এই দীর্ঘ সময় বিলম্বের ফলে অনেক ছেলেমেয়ে মানসিকভাবে বিষন্নবোধ করে। অনেকে হস্তমৈথুন আর পর্ণগ্রাফির নেশায় আসক্ত হয়ে জীবন-যৌবনকে নষ্ট করে ফেলে। অনেকে বেছে নেয় আত্মহত্যার পথ। কেউবা পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। অনেক যুবক-যুবতি আবার বিবাহ-বহির্ভূত হারাম রিলেশন তথা প্রেম-ভালোবাসায় লিপ্ত হয়ে পড়ে। যার ফলে এক সময় ফুটপাতে, ডাস্টবিনে পাওয়া যায় সদ্য ভূমিষ্ট নবজাতক শিশুর লাশ, যা নিয়ে অনেক সময় শেয়াল-কুকুরকেও টানাটানি করতে দেখা যায়। এসবের দায়ভার কস্মিনকালেও রাষ্ট্র এড়াতে পারবে না, যদি না রাষ্ট্র বিয়েকে সহজ করে তুলে।’’

‘‘বিয়ে শুধুমাত্র জৈবিক চাহিদা পূরণ করা বা একসঙ্গে থাকা নয়। বরং এর পেছনে যেমনিভাবে একদিকে সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষা পায়, তেমনিভাবে অন্যদিকে যুবক-যুবতিদের স্বাস্থ্যগত অনেক উপকারিতার দিকটাও রয়েছে। বক্ষ্যমাণ ‘‘বিয়ে ও ডিভোর্স’’ গ্রন্থে লেখক শুধুমাত্র বিয়ের উপকারিতা বা সঠিক সময়ে বিয়ে না করার ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করেননি। সেই সাথে বিয়ে বিচ্ছেদের ভয়াবহ প্রভাবের কথাও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে উল্লেখ করেছেন। গ্রন্থটি পাঠকদের পড়া এবং বুঝার সুবিধার্থে লেখক গ্রন্থটিকে মোট ৭টি অধ্যায়ে ভাগ করেছেন। প্রতিটি অধ্যায়ে রয়েছে স্বতন্ত্র পরিচ্ছেদ। পরিশেষে প্রয়োজনীয় উপসংহারে বইটির ইতি টেনেছেন।’’


♦প্রথম অধ্যায়: কুরআন ও সুন্নাহর আলেকে-

‘‘কুরআনের আয়াত, হাদীসে রাসূলের আলোকে এবং বিভিন্ন মনীষীর বাণীর আলোকে লেখক রেফারেন্সসহ একদিকে বিয়ের উপকারিতা, বিবাহিত থাকার সুফল, মানসিক প্রশান্তির দিকগুলো আলোচনা করেছেন। আবার অন্যদিকে অবিবাহিত থাকার অপকারিতা, অবাধ যৌনাচার ছড়ানোর সম্ভাবনা, মানসিক অস্থিরতার কথাও সংক্ষেপে তুলে ধরেছেন।’’


♦দ্বিতীয় অধ্যায়: মুসলিম যুবক: বিয়ে-বিলম্বের শিকার-

‘‘উক্ত অধ্যায় লেখক বিশদভাবে বিয়ের উপকারিতা এবং একাকিত্বের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন। সেই সাথে অবিবাহিত পুরুষরা বিবাহিত পুরুষদের তুলনায় কিভাবে দ্রুত মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে, কিভাবে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে, তাদের উপার্জন কম হওয়ার কারণ এবং মৃত্যুর ঝুকি বেশি থাকার কারণও তুলে ধরেছেন। সেই সাথে মুসলিম যুবকদের প্রতি বিশ্ববরেণ্য আলেমদের উপদেশ এবং দ্রুত বিয়ে করে মুসলিম যুবকদের জন্য সমাধানের পন্থাও বলে দিয়েছেন।’’


♦তৃতীয় অধ্যায়: বিয়েপূর্ব প্রেম ও ডেটিং-

‘‘লেখক আমেরিকাতে থাকার সুবাধে সেখানের যুবক-যুবতিদের মধ্যকার বিয়েপূর্ব প্রেম এবং অবাধ মেলামেশার ক্ষতিকর দিকগুলো স্বচক্ষে দেখেছেন। পশ্চিমা সমাজে অশ্লীলতার ভয়াবহ বিস্তার এবং তার ফলে পশ্চিমা সমাজ ব্যবস্থা ধ্বসে পড়ার সম্ভাবনাও ব্যক্ত করেছেন। সেই সাথে যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং ভারতে অনলাইন ডেটিংয়ের ভয়াবহ বিস্তারের তথ্য তুলে ধরেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সহজতা এবং অপব্যবহারের ফলে আজ সমাজ এবং রাষ্ট্র ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত।’’


♦চতুর্থ অধ্যায়: বিয়ে-বিচ্ছেদের ক্ষতিকর দিক-

‘‘নিঃসন্দেহে বিয়ে-বিচ্ছেদ সকলেরই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। দুটো পরিবার থেকে নিয়ে সেই পরিবারের সন্তান-সন্তুতি, নাতি-নাতনি সকলের উপরেই এর ক্ষতিকর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। একদিকে ছেলে-মেয়েরা বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে, অন্যদিকে শিশু নির্যাতনের হার বেড়ে যায়। একদিকে শিশুদের মৃত্যুর হার বেড়ে যায়, আবার অন্যদিকে পড়ালেখায় বাজে ফলাফল করে।’’


♦পঞ্চম অধ্যায়: বিয়েবিচ্ছেদের প্রক্রিয়া-

‘‘উক্ত অধ্যায়ে ইসলামের আলোকে একান্ত প্রয়োজনে বিয়েবিচ্ছেদের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। নিতান্ত জরুরি প্রয়োজনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার সম্পর্ক বিচ্ছেদের বিশদ ব্যাখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সাথে তালাক দেয়ার নিয়ামাবলিও তুলে ধরা হয়েছে।’’


♦ষষ্ঠ অধ্যায়: সাফা-মারওয়া এবং নারী-পুরুষের মানসিক ভিন্নতা-

‘‘এই অধ্যায়ে লেখক ইসলামের দৃষ্টিতে জৈবিক, আবেগিক এবং মানসিক দিক দিয়ে নারী-পুরুষের মধ্যকার প্রগাঢ় ভিন্নতার কথা আলোচনা করেছেন। নারীরা প্রতি মাসে হায়িজ চলাকালীন সময় বিভিন্ন হরমোনাল পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যান, যার ফলে তারা দুর্বল থাকে। প্রাক-ঋতুকালে তাদের মানসিক পরিবর্তনের ফলে অনেকে আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে ওঠে, অনেকে মানসিক বৈকল্যের কারণে আক্রমণাত্মকও হয়ে ওঠে। কিন্তু পুরুষদের উপর প্রজননচক্রের বিভিন্ন হরমোনজনিত প্রভাব না থাকার কারণে প্রতি মাসে তারা মেয়েদের মতো দুর্ভোগে পড়ে না। নারী-পুরুষের এই প্রগাঢ় ভিন্নতার কারণে তাদের মধ্যকার মানসিক ও স্বভাবগত পার্থ্যকগুলোই উক্ত অধ্যায়ে বিশদভাবে আলোচনা করা হয়েছে।’’


♦সপ্তম অধ্যায়: কীভাবে রক্ষা পাবে মুসলিম পরিবার-

‘‘একটি সুখি মুসলিম পরিবার গঠনের রক্ষাকবচ স্বামী-স্ত্রী উভয়ের হাতেই রয়েছে। স্বামীর উচিত স্ত্রীকে সময় দেয়া, ভালোবাসা, মন খুলে কথা বলা; তেমনি স্ত্রীকেও উচিত স্বামীর ডাকে সাড়া দেয়া, তাকে সম্মানের দৃষ্টিতে দেখা। উক্ত অধ্যায়ে লেখক বিয়ে রক্ষার ব্যাপারে আরো কতগুলো পরামর্শ দিয়েছেন। সেই সাথে আরো তুলে ধরেছেন বিয়েকে টিকিয়ে রাখতে নারীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা। উভয়ের ক্রোধকে নিয়ন্ত্রণে রাখার কথাও ব্যক্ত করেছেন। সেজন্য পুণ্যবানদের সংস্পর্শে থাকার উপকারিতাও আলোচনা করেছেন।’’


♦গ্রন্থটি কেন পড়া দরকার?

‘‘বিয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে, একাকিত্বের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে বুঝতে, বিয়ে-বিচ্ছেদের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে অবহিত হতে এবং বিয়ে-বহির্ভূত প্রেম-ডেটিংয়ের ভয়াবহতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য বইটি পাঠ করা আবশ্যক।’’


♦গ্রন্থটির আলোচনা-সমালোচনা-

‘‘কালান্তরের প্রকাশিত বিয়ে সংক্রান্ত এটাই প্রথম বই যার মুনাফা তাঁরা ‘‘করজে হাসানা’’ নামক একটি প্রজেক্টের জন্য ওয়াকফ করে দিয়েছেন, যারা আর্থিক সমস্যার কারণে বিয়ে করতে পারছে না তাদের জন্য। নিঃসন্দেহে এটা অনেক বড় সদকায়ে জারিয়ার একটা অংশ। আল্লাহ তাঁদের দানকে কবুল করুন।

বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটের আলোকে এক অনন্য সাধারণ গ্রন্থ এটি। গ্রন্থটির অনুবাদ থেকে নিয়ে প্রচ্ছদ, বাঁধাই, পেইজের মান অতুলনীয়। মূল লেখক এতে প্রচুর পরিমাণে বৈজ্ঞানিক রিসার্চের উল্লেখ করেছেন, সেই সাথে কুরআন এবং হাদিসের অনেক আয়াতও প্রয়োজনের তাগিদে তুলে ধরেছেন। যা গ্রন্থটির গ্রহণযোগ্যতাকে অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয়।’’


 
Post a Comment

Post a Comment