কল্পিত কারাবাস
লেখক : মুহাম্মাদ হোসাইনপ্রকাশনী : শব্দতরুবিষয় : বিভিন্ন আসক্তি এবং তার নিরাময়
একটা সময় ছিল যখন ছেলে তার মাকে, স্বামী তার প্রিয় স্ত্রীকে, একজন বোন তার ভাইকে চিঠি লিখত। সারাদিন কাজ করার পর, বাবা যখন বাড়ি ফিরে সবাই একসাথে টেবিলে খাবার খেতে বসত, তখন তাদের কথোপকথন জুড়ে আনন্দ এবং দুঃখের কথায় ভরা থাকত। মেয়েরা পুতুল নিয়ে খেলত আর কিশোরদের সেই মাঠ কাঁপানো ফুটবল খেলা দেখার জন্য অধির আগ্রহ নিয়ে পুরো গ্রাম বসে থাকত মাঠের ধারে।
কিন্তু এখন আর কেউ কাউকে চিঠি লেখে না। পুরো পরিবার আর একসাথে বসে আড্ডা দেয় না খাবার টেবিলে। ছেলে-মেয়ে, কিশোর-কিশোরীরা আর নিজেদের খেলা উপভোগ করে না। আগের মতো মায়া ভালোবাসা আর । কারণ একটাই স্মার্টফোন।
বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন, ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অনিয়ন্ত্রিত ব্যাবহার মহামারী হিসেবে রুপ নিয়ছে। সময়ে অসময়ে যখন ইচ্ছা আমরা ফেইসবুকে ইন্টারনেটে ঢুঁ মারছি। যার ফল হিসেবে আমাদের লাভের থেকে ক্ষতিই হচ্ছে বেশি ! !…
শুরুর দিকে:
মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট একটি কল্পিত কারাবাস স্বরূপ।যেখানে ঈমানদারেরাও পা পিছলে ফসকে পড়ে যাচ্ছে সেই অতল গহব্বরে। কারাবাস টাকে যদিও আমরা দেখতে পাচ্ছি না তবুও যেন আবদ্ধ করে রেখেছে আমাদের। কখনো ভেবে দেখেছি আসলেই কি আমাদের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ? যদিওবা গুরুত্বপূর্ণ হয় কিন্তু আমরা কী এর পর্যাপ্ত ব্যবহার করছি না মাত্রা অতিরিক্ত হয়ে যাচ্ছে? এগুলোই লেখক প্রশ্ন তুলেছেন এবং সুন্দর ভাবে তার বর্ণনা ও করেছেন।
আমাদের চরিত্র কলুষিত হচ্ছে এই স্মাটফোন আর ইন্টারনেটের মাধ্যমে। হারিয়ে যাচ্ছে হায়া(লজ্জা), পর্দানশীল নারীরা আজ হচ্ছে দুশ্চরিত্র! বেড়ে যাচ্ছে ধর্ষণ আর পাপাচার! কেউই যেন রেহাই পাচ্ছে না এর ভয়াবহতা থেকে! শিশু কিসোর থেকে শুরু করে বয়-বৃদ্ধ, স্মাটফোনের এই নিকষ কালো অন্ধকারে সবাই যেন ডুবে যাচ্ছে !
এর থেকে কি রেহাই নেই? উত্তর, হ্যা আছে এবং তা খুবই জরুরি। চলুন যেনে নেই এই ভয়াবহতা থেকে কীভাবে সমাধান পাব।
সমাধানঃ
উপরের এই সমস্যার গুলোর সমাধান পেতে আপনাকে পড়তে হবে মুহাম্মাদ হোসাইন এর রচিত "কল্পিত কারাবাস" বইটি। বইটিতে স্মার্টফোন, ইন্টারনেট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যাবহারের অপকারিতা, স্মার্টফোন-ইন্টারনেট থেকে দূরে থাকার উপায় এবং এর উপকারিতা আলোচনা করেছেন। বইটির কলেবর ছোট হলেও বিষয়গুলো সংক্ষেপে সহজ ভাষায় তুলে ধরা হয়েছে।
কল্পিত কারাবাস বইটি মূলত ইন্টারনেট আর স্মাটফোনের মায়াজালে আটকে পড়া ভাইদের জন্য। বইটিতে ভাইয়েরা একটা দিকনির্দেশনা পাবেন ইনশাআল্লাহ। যে বা যারা এই দিকনির্দেশনা ফলো করে চলবে আশা করা যায় তার এই জাল থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে।
বইটা হতে পারে আপনার জন্য খুবই জরুরি, আপনি যদি একজন ইন্টারনেট আসক্ত ব্যাক্তি হয়ে থাকেন। বইটিতে বেশ সুন্দর ভাবে ইন্টারনেটের ক্ষতিকর দিকগুলো খুবই সূক্ষ্মভাবে উল্লেখ করা আছে। কল্পিত কারাবাস বইটি পড়ার মাধমে আপনি অনলাইনের গোপন বিষয় গুলো সম্পর্কে আরো গভীরে জানতে পারবেন।
যে মানুষটা একটু আগে ইউটিউবে দ্বীনি ওয়াজ শুনেছে সে মানুষটাই পরক্ষণে পর্ণগ্রাফির মতো বিষাক্ত দুনিয়ায় চোখ বুলিয়েছে। কারণ ইন্টারনেটে সে ঠিকই দ্বীনি বিষয় নিয়ে সার্চ করেছিল কিন্তু এক লিংক থেকে আরেক লিংকে প্রবেশ করতে করতে একটা সময় তার সামনে এমন কিছু চলে আসে যা আমাদের মতো দূর্বল ইমানের মানুষ চেয়েও উপেক্ষা করতে পারেনা। যারা ইন্টারনেটের বিষয়ে সম্পূর্ণ নতুন তারা তো জানেই না এটাকে কিভাবে উপেক্ষা করতে হয়। কঠোরভাবে নজরের হেফাজত করা মানুষটাও ফেসবুকে বেগানা নারীর ছবি দেখে দেখে নিজের গায়রত হারিয়ে বসে। ইন্টারনেটে বেগানা নারীর ছবি দেখে দ্বীনদার ভাইয়েরাও নিজের সুন্দরী স্ত্রীর প্রতি মনোযোগ হারিয়ে ফেলে। একটা নোটিফিকেশন দেখার জন্য ফেসবুকে ঢুকেছিলেন অথচ ২ টা ঘন্টা কোনদিকে পার হয়ে গেল আন্দাজই করতে পারলেন না। ফেসবুক আপনাকে বাকপটু করে তুলবে ঠিকই কিন্তু আপনার জীবনের আমল কমিয়ে দিবে। যে ব্যাক্তি ঠিক মতো ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়েনা সেও এখন ফেসবুকে অনেক বড় মুফতি সেজে বসে থাকে। দ্বীনদার মানুষরা পোস্ট করার পর একটু পর পর নোটিফিকেশন চেক করে কয়টা লাইক,কমেন্ট এসেছে। যার ফলে রিয়া সৃষ্টি হয়।
কিছু সংশয় ও তার জবাবঃ
কিছু ভাই বইটি পড়ে মন্তব্য করেছেন বইটিতে তো শুধু কিছু টিপস দেয়া আছে। এতে তেমন কোন উপকার পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। আবার কেউ বইটি পড়ে খুব মোটিভেট হয়েছে কিন্তু কয়দিন যেতে না যেতেই সব শেষ!
Post a Comment