আসমান
হৃদয় আল্লাহর ঘর। মানুষের হৃদয় তৈরি করা হয়েছে শুধু আল্লাহর জন্য। সেখানে অন্য কিছু প্রবেশ করলে শুরু হবে জাগতিক অশান্তি।
এভাবেই শুরু হয়েছে বইটি।
বলছিলাম ”আসমান” নামে একটি উপন্যাস বই নিয়ে। যেই গল্প জীবনের চেয়েও বড়। এই উপন্যাসে বর্ণীত স্থান সত্য, কাল সত্য, ইতিহাস সত্য, শুধু এর চরিত্রগুলোই কাল্পনিক।
যারা মুলত বিভিন্ন উপন্যাস পড়তে অভ্যস্থ ইসলামি বইয়ে ঢ়েড় অরুচি, দুনিয়াটা মস্ত বড় খাইদাই ফুর্তি করি এমন টাইপের মানুষের জন্য অসাধারণ একটি ডোজ হবে এটি।
এখানে দেখানো হয়েছে কিভাবে ওমর নামে এক যুবক লেখাপড়া, খেলাধুলা সবখানে ফাস্ট বয় হয়েও কোন এক কারনে এগুলো তার জিবনে বিষাদ নামিয়ে আনে। সবকিছুই তার জিবনে অর্থহীন হয়ে পড়ে। এরপর জিবন মোড় নেয় অন্য মোড়ে। নেশা আর মিউজিকে আত্মার প্রশান্তি খুজতে থাকে। কিন্তু যে আত্মা এসেছে আসমান থেকে তার আহারও রয়েছে আসমানে। অবশেষে জিবনের নানান চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আলোর খোজ পায় ওমর।
একসময় সে তার হৃদয়ে স্থান দিয়েছিল দুনিয়াকে। কেউ একজন ছিল তার শয়নে স্বপনে। কিন্ত তার ঘটল করুণ পরিণতি। পরবর্তীতে সে আগের চেয়েও মুল্যবান জিনিস পেয়েও হৃদয়ে একমাত্র আল্লাহকেই স্থান দিল। আল্লাহ তাকে উত্তম বিনিময় প্রদান করলেন। এভাবেই গড়াতে থাকে কাহিনিটি।
যদিও এর পরেও আরো কিছু ঘটনা প্রবাহ রয়েছে। মুলত এটা শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের ধানমন্ডি থেকে পাকিস্তানের করাচিতে। সেখান থেকে আফগানিস্তানের কাবুল। সেখান থেকে গুয়ান্তনামো বে, এরপর শেষ ঠিকানা রেডক্রসের শেল্টারে।
বইটি শেষ করার পরও দীর্ঘ কিছুদিন এর রেশ আপনার মস্তিষ্কে থেকে যাবে। এমনও হতে পারে এই বই আপনাকে আজীবনের জন্য প্রভাবিত করে ফেলতে পারে।
একবারে অন্ধকার গলি-গুপচি থেকে একটা জীবন আলোকময় হওয়ার রোমাঞ্চকর জার্নি এই বইটি।
আমার পড়া সেরা বইয়ের একটি ছিলো ‘আসমান’। ঘোর অন্ধকারে ঘেরা চারপাশ। ডিপ্রেশন, আসক্তি আর গুনাহের সাগরে সাঁতরে ক্লান্ত মনে হচ্ছে! জীবনের এই দুরবস্থা থেকে বেরোনো অসম্ভব। এমন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে সেরা মানুষটা হয়ে ওঠার গল্প নিয়ে সাজানো এই বইটা আমাকে এতটাই মুগ্ধ করেছিলো যে এক বসাতেই পড়ে শেষ করে ফেলেছিলাম পুরো বই। শিবলি ভাইকে চিনতাম না, জানতাম না এমনকি উনার নামটা পর্যন্ত কখনো শুনিনি এর আগে। আমার এই ছোট্ট জীবনে উপহার হিসেবে পাওয়া বইয়ের মাঝে এটা সেরা ছিলো। এই একটা বই পড়েই উনার লেখার ভক্ত হয়ে গেছি! এবারের মেলায় উনার আরেকটা বই নিয়েছি এবং উনার সাথে দেখা করে কথা বলতে পেরেছি, আলহামদুলিল্লাহ। মানুষ হিসেবেও দারুন লেগেছে উনাকে। আল্লাহ উনাকে উত্তম জাজা দান করুক।
Post a Comment