-->
zWZ3ZJ90R4zzhbql6NUZDSuEAK5vmsQ96TEJw5QR
Bookmark
randomposts

কোরবানির পশু জবাই, মাংস প্রস্তুত ও সংরক্ষণের জন্য করণীয় পদক্ষেপ।

মুসলমানদের বড় দুটি ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে একটি হচ্ছে পবিত্র ঈদ উল আযহা। যাকে আমরা কোরবানির ঈদ বলে জেনে থাকি। এই কোরবানির ঈদে মহান আল্লাহ তায়ালাকে সন্তুষ্ট করার জন্য আমরা কোরবানি করে থাকি। এই কোরবানির সকল কার্যক্রম সুন্দরভাবে করার জন্য আমি আজকে এই টপিকের মাধ্যমে আপনাদের বেশকিছু দিক নির্দেশনার সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো। যাতে করে এই দিক নির্দেশনাগুলি ফলো করে আপনারা আপনাদের কোরবানিটি সুন্দরভাবে সম্পূর্ণ করতে পারেন। বলে রাখা ভালো আমি যে দিক নির্দেশনাগুলি এখানে তুলে ধরবো সেগুলো মূলত বাংলাদেশ সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের। তো চলুন দেখে নেওয়া যাক কোরবানির দিক নির্দেশনাগুলি।

কোরবানির দিক নির্দেশনাগুলি:

এখানে আমরা কোরবানির দিকনির্দেশনাগুলিকে তিনটি ধাপে ভাগ করেছি। কোরবানির পশু জবাইয়ের পূর্বে করণীয়, মাংস প্রস্তুতকরণে করণীয় ও মাংস সংরক্ষণে করণীয়। নিম্নে তিনটি ধাপকে আলাদা আলাদাভাবে তুলে ধরা হলো।

কোরবানির পশু জবাইয়ের পূর্বে করণীয়:

  • পশু জবাইয়ের ১২ থেকে ২৪ ঘন্টা পূর্ব থেকে পরিষ্কার ও জীবানুমুক্ত পানি ছাড়া অন্যকোনো খাবার খাওয়ানো থেকে বিরত থাকুন।
  • জবাইয়ের পূর্বে পশুটিকে পর্যাপ্ত বিশ্রামে রাখূন।
  • জবাইয়ের পূর্বে পশুটিকে ভালোভাবে গোসল করিয়ে নিন যাতে শরীরে কোনো ময়লা বা গোবর লেগে না থাকে।
  • একটি পশুর সামনে অন্য আরেকটি পশু জবাই করা থেকে বিরত থাকুন।
  • সংক্রামক বা ব্যাধিমুক্ত দক্ষ ব্যক্তি দ্বারা স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানির ব্যবস্থা করুন।
  • সরকার দ্বারা নির্ধারিত স্থান অথবা নিজস্ব বসতবাড়ি ব্যাতীত রাস্তাঘাট ও যত্রতত্র পশু জবাই থেকে বিরত থাকুন।
  • কোরবানির স্থানটি পরিস্কার, উঁচু এবংনালা-নর্দমা থেকে দূরে রাখুন।

মাংস প্রস্তুতকরণে করণীয়:

  • কাজ শুরু করার পূর্বে ও পরে হাত পরিষ্কার করে ধুয়ে জীবানুমুক্ত রাখুন।
  • মাংস প্রস্তুতকরণে পরিষ্কার ও জীবানুমুক্ত চুরি, দা, চাটাই ও অন্যান্য সরঞ্জমাদী ব্যবহার করুন।
  • জবাইকৃত পশুর মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরে শরীর হতে চামড়া ছাড়ানোর কাজ শুরু করুন।
  • মাংস হাত দিয়ে ধরার ক্ষেত্রে পানিরোধক হাত মোজা ও পরিষ্কার পোষাক পরিধান করুন।
  • পশুর চামড়া সারানো এবং মাংস কাটার সময় মাংস ও মাংস কাটার সরঞ্জমাদি যেন সরাসরি মাটি, ধুলাবালি ও অন্যান্য আবর্জনার সংস্পর্শে না আসে এবং কুকুর, বিড়াল, হাঁস-মুরগি, পোকামাকড়, মাছি বা অন্যান্য পোষ্য প্রাণী দ্বারা মাংস যাতে দূষিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
  • মাংস কাটার সময় রোগাক্রান্ত অংশ যেমন: সিস্ট, অস্বাভাবিক বড় লসিকাগ্রন্থি, সিমেন্টের মতো শক্ত কলিজার কোনো অংশ ইত্যাদি পাওয়া গেলে সতর্কতার সাথে সে অংশটুকু পৃথক করে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে মাটিতে পুঁতে ফেলুন।
  • মাংস সংগ্রহ শেষে জবাইয়ের স্থান নির্ধারিত মাত্রায় ব্লিচিং পাউডার বা অন্য কোনো জীবাণুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করুন।
  • যথাযথভাবে বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন।

মাংস সংরক্ষণে করণীয়:

  • কাঁচা ও রান্না করা মাংস আলাদা রাখুন।
  • কাঁচা মাংস স্বাভাবিক তাপমাত্রায় চার ঘণ্টার বেশি রাখবেন না; যত দ্রুত সম্ভব রান্না করুন।
  • মাংস স্বল্প সময়ের জন্য সংরক্ষণ করতে চাইলে রেফ্রিজারেটর ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার নিচে রাখুন এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য সংরক্ষণ করতে চাইলে ডিপ ফ্রিজে মাইনাস ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার নিচের তাপমাত্রায় রাখুন।
  • প্রতিবারের রান্নার উপযোগী পরিমাণ মাংস ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেটে আলাদাভাবে সংরক্ষণ করুন।
  • মাংস সঠিক তাপে ভালোভাবে সিদ্ধ করে রান্না করুন।

তো এইভাবে কোরবানির পশু জবাইয়ের পূর্বে করণীয়, মাংস প্রস্তুতকরণে করণীয় এবং মাংস সংরক্ষণে করণীয় বিষয়গুলো ফলো করে আসন্ন কোরবানির কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য আপনার প্রতি অনুরোধ রইলো। এতে করে আপনি নিজেও সুরক্ষিত থাকবেন এবং পরিবেশকেও সুরক্ষিত রাখতে পারবেন যা সবার জন্যই মঙ্গলজনক।

তথ্যসূত্র: খাদ্য মন্ত্রণালয়।

আপনাদের সুবিধার্থে আমি আমার টিপস এন্ড ট্রিকসগুলি ভিডিও আকারে শেয়ার করার জন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করেছি। আশা করি চ্যানেলটি Subscribe করবেন।

Post a Comment

Post a Comment